অাজ দিন টা ভালই যাচ্ছে সাইমের, খুবই ভাল কারণ যাকে সে মনে মনে পছন্দ করে তাকে কলেজ যাওয়ার সময় রাস্তায় দেখতে পেরেছে। এই জন্য সাইম ফুরফুরা মেজাজ এ বাসার ছাদের উপর বসে বাসাতের ঘ্রাণ নেওয়ার চেষ্টা করতেছে অার চোখ বন্ধ করে কি জেনো নিজের মধ্যে খুজার চেষ্টা করতেছে। হয় তো সেই মেয়েটাকে যার জন্য এত খুশিতে অাছে, নয়তো অন্য কিছু। কিন্তু তার অাবভাবে বুঝা এত সহজ না যে, মানুষ সব কিছু বুঝতে পারবে। সে খুব চাপা স্বভাবের।
এই চাপা স্বভাবের কথা বলাতে এক টা ঘটনা মনে পরে গেলো...... যখন সে ক্লাস ৬ এ পড়তো তখন দূর সসম্পকের কাজিন এর সাথে পরিচিত হয় বাসায়। তারা সাইমের বাসায় মেহমান এসেছিল, সেই মেয়েটির হাসিটা তাকে এতই ভাল লেগেছিল যে সাইম চোখ বন্ধ করলেই তার হাসি টা দেখতে পারতো। এরই মধ্যে তাদের অাসা যাওয়া হতো কিন্তু কোন দিন কথা বলার সাহস হয়নি তার, তারা বাসায় অাসলেই সে কোন এক ঘরে লুকিয়ে থাকতো, না হয় অন্য কোথাও খেলতে চলে যেতো। কিন্তু যাওয়ার অাগে তার হাসিটা দেখতে ভুলতো না।
এই ভাবে কেটে যায় ৪+ বছর। মজার বিষয় হলো দুই জনেই সেম ক্লাসে পড়তো কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন স্কুলে। দুই জনেই এস.এস.সি পরিক্ষা দেয় এবং পাসও করে। এস.এস.সি তে তাদের গ্রুপ ছিল সেম কিন্তু এইচ.এস.সি তে ভর্তি হওয়ার পরে নিলীমা তার গ্রুপ পরিবতর্ন করে বানিজ্য বিভাগে নিয়ে নেয়। ওহ বলতে ভুলেগেছি...! তার কাজিনের নাম ছিল নিলীমা, যেমনি নাম টা সুন্দর ঠিক তেমনি রুপেও, কিন্তু সাইম কে তার রুপ কোন ভাবে অর্কষণ করতে পারে নি যত টা না তার হাসিটা তাকে পাগল করেছিল। মজার ঘটনার আর একটা হলো, কাকতালীয় ভাবে তারা একই কলেজে ভর্তি হয়েছে।
তাদের ঐ ভাবে দেখা হতো না, তবে মাঝে মাঝে দেখা হলে সাইম শুধু সালাম দিয়েই চলে যেতো তার ক্লাসের দিকে। একদিন হঠাং নিলীমার চেহার দিকে দৃষ্টি অাটকে যায় কারণ একটা বড়ো কাররণ ছিল সে দিন, যেমন নিলীমা সব সময় চুল ছেড়ে থাকতো তা সাইমের পছন্দের ছিল না। কিন্তু অাজকে হঠাৎ সে সুন্দর করে চুল বেধেঁ কপালে ছোট একটা কালো টিপ দিয়ে কলেজে এসেছে।
সাইম কেনো যানো নিজেকে সামলে উঠে পারতেছে না, সে মনে মনে ঠিক করে নিয়েছে অাজকে যাই হোক না কেনো নিলীমাকে সে তার মনের সব কথা বললে ফেলবে। এই সাহস নিয়ে দেখা করে বললো,
- অাসলামুঅালাইকুম, নিলীমা।
- ওয়ালাইকুম-অাসলাম (সেই হাসি মাখা মুখে নিলীমার উত্তর)
- কেমন অাছেন? বাসার সবাই ভাল অাছে?
-জ্বি অামি ভাল & বাসার সবাই ভাল। অাপনি?
-এই তো চলে যাচ্ছে খুব ভালই। অাজকে কি খুব ব্যস্ত?
- না তো, ক্লাস অাছে পরে প্রাইভেট অাছে এর পরে বাসায়।
- ঠিক অাছে অামি অামার সাইকেল টা রেখে অাসতেছি, কয়েকটা কথা অাছে।
- ওকে, অামি কমরুমে থাকবো ক্লাসের অাগে। পাশে দ্বারায়েন অামি বের হবো।
- ওকে, বাই।
বাই বলার সাথে সাথে সাইম এক মহুতও সেখানে অপেক্ষায় ছিল না কারণ তার হাত, পা অবশ হয়ে যাচ্ছিলো তার সাথে কথা বলার সময়। এখন গেরেজ এ সাইকেলটা রেখেই অাগে পানি পান করলো অনেক টা..... কলেজ এর মাঠে বি.এন.সি.সির জন্য একটা উচু জায়গা অাছে সেখানেই বসে পরলো সাইম। অার মনে মনে ভাবতেছে মনে হয় মাউন্ডএভারেস্ট জয় করার পরেও এমন ফিল করে না মানুষ জন কিন্তু সে তার চেয়েও বেশি ফিল করতেছে। হঠাৎ এই রকম বসে থাকতে দেখে এক বন্ধু এসে সাইমের সাথে যোগ দিল একটু অাড্ডায়। তার সাথে কথা বলতে কেনো যেনো মজা পাচ্ছিলো না সাইম..তাই তাকে বলল:-
দোস্ত তোর সাথে একটু পরে কথা বলি তুই ক্লাস করে যা....
দোস্ত তোর সাথে একটু পরে কথা বলি তুই ক্লাস করে যা....
যে চলে যায়।
এই দিকে সায়েম খুব অাগ্রহ সহকারে কলেজ এর পাশে এসে দ্বারালো & নিলীমা কম রুম থেকে বের হল কিন্তু অশ্চর্যের বিষয় হলো নিলীম চুল গুলো খুলা... এলো মেলো ভাল ই লাগতেছি কিন্তু সায়েম এর ভাল লাগে নি....!
নিলীমা এসে বললো কি বললেন বলুন... সাইম তখন কিছু খুজে পাচ্ছিল কি বললে, কারণ কিছুক্ষণ অাগে বন্ধুটা সাইমের কাছে এসেছিল সেই নাকি নিলীমাকে তার চুল গুলো খুলতে বলেছিল এই জন্যই তখন তার সাথে কথা বলতে খুব খারাপ লাগতেছিল সাইম এর। কিন্তু সে সেটা বিশ্বাস করেনি এক মহুতের জন্যও কিন্তু এখন বিশ্বাস না করে কোন উপায় নেই। সাইম অনেক কষ্ট করে বললো না তেমন কিছুই বলার নাই। কি যে বললে চেয়েছিলাম তাই ভুলে গেছি & সাথে সাথে একটু হাসি রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করার পরেও সাইম সফল হতে পারে নি। অার কিছু না বলে সাইম ফিরে অাসে সেখান থেকে। সেদিন অার সাইম কোন ক্লাস করতে পারে নি শুধু ভেবেছে সে কেনো অন্যের কথায় চুলগুলো খুললো।
সেদিন রাত্রেও ঘুমাতে পারি নি সে শুধু ভেবেছি অামি কেনো এমন করতেছি.. অামি যে তাকে পছন্দ করি সে তো জানে না, তবে অামার এমন পাগলামী করা উচিত নয়।
সে দিন থেকে সায়েম বন্ধ করে হাজার চেষ্টা করেও অার নিলীমার হাসিটা অার দেখতে পাই না....
অাজকে তার হাসিটা কেনো যেনো অদ্ভুত টাইপের তাই বুঝা যাচ্ছে না যে, সে অাসলে কি খুজেতেছে!
অাজকের ঘটনা টা নাকি ফেলে অাসা ঐ দিন গুলো যেটা সে এখনও জানে না সেটা কি ছিল??
শুধুই ভাল লাগা নাকি মৃদু ভালবাসাও?
No comments:
Post a Comment